এই যে আমি বারবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি
তোমার হৃদয়ের অভিজ্ঞান থেকে এর কি কোনো মানে হয়?
জলভারাতুর মেঘ, আর আমার অন্তরে
তৃষ্ণার কোনো শেষ নেই। এই অগ্নিদাহ বুকে নিয়ে
জন্ম-জন্মান্তর আমি কি কেবল গুপ্ত ঘাতকের
প্রতীক্ষা করতে থাকবো?
যখন রোদ উঠবে, আমি বাতাসে শুনতে পাবো
অজস্র সুরের ঐকতান। আর তখন তুমি
অভ্যাসবশত আয়নার সামনে বিবসনা ও আত্মমগ্ন—
তারপর এক প্রহর পার হলে তুমি নৈমিত্তিক জ্যোৎস্নায়
পায়ে জড়াবে সোনার শিকল আর গুনগুন করে গাইবে
ইন্দ্র সভার আদিতম গান
বিস্মৃতির গহিন থেকে উঠে এসে মগ্ন-চৈতণ্যের অরণ্যানী
আমাকে ডেকে নেবে নিবিড় বিষণ্নতায়—
তার সুস্থির দ্বন্দ্ব ও অন্ধকারে। তার চোখের পাতার
মন্থরতার মধ্যে আমি লীন হয়ে যাবো
দীর্ঘতম নিদ্রার আবেশে। আর তুমি মাঝ রাতে
নিদ্রা ও জাগরণের বিপরীত আহ্বানে
বিস্ফোরিত রোমার স্প্রিন্টারের মতো
খানখান হয়ে ছড়িয়ে পড়বে— বারুদের ঝাঁজে—
ধোঁয়ার আচ্ছাদনে— তাজা রক্তের সংলগ্নতায়।
তারপর তোমরা বিখণ্ডিত সত্তা অঙ্কুরিত লতার মতো
হামাগুড়ি দিতে দিতে জড়ো হবে আমার ছায়ার ডানায়
কেননা, তখনো তার অজস্র জারুলের হৃৎপিণ্ডে এবং
অপরাজিতার ময়ূরকণ্ঠি বন্যায় ওড়ার আকাঙ্ক্ষাটুকু
দুর্নিবার ও অটুট থেকে গেছে।
আমার বুকের নিরবধি হাহাকারে
আর সপ্ত-মরুভূমির তৃষ্ণায় তখন স্ফুরিত হবে
বৃষ্টিভেজা আলোর স্পন্দন— কুণ্ঠাহীন মহা নাক্ষত্রিক ধ্বনি।
আলোচনা